বৃষ্টি মানুষের জন্য আল্লাহ তায়ালার বিশেষ নেয়ামত

আসমান থেকে নেমে আসা বৃষ্টি মানুষের জন্য আল্লাহ তায়ালার বিশেষ নেয়ামত। অনাবৃষ্টি দেখা দিলে পুরো জনপদের মানুষকে তীব্রদাপদাহে ভুগতে হয়। এতে মানুষের পাশাপাশি পাখ-পাখালি বিভিন্ন জীব-জন্তুকেও কষ্টে ভুগতে হয়। আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে নেমে আসা বৃষ্টির পানিতে শুষ্ক জমিন সিক্ত ও জীবন্ত হয়। উর্বর জমিনে ফল-ফসল উৎপাদন হয়।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যখন তা ভারী মেঘমালাকে বয়ে নিয়ে যায়, তখন আমি তাকে কোনো মৃত ভূখন্ডের দিকে চালিয়ে নিয়ে যাই, তারপর সেখানে পানি বর্ষণ করি এবং তা দ্বারা সর্বপ্রকার ফল উৎপন্ন করি। এভাবেই আমি মৃতদেরও জীবিত করে তুলব। হয়তো তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করবে’ (সুরা আরাফ : ৫৭)।

এ আয়াতের মাধ্যমে মৃত্যুর পর পুনর্জীবন দানের কথা প্রমাণিত হয়। ভূমি শুকিয়ে গেলে তা নিষ্প্রাণ হয়ে যায়। জীবনের সব আলামত তা থেকে মুছে যায়। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে তার ভেতর নবজীবন সঞ্চার করেন। ফলে সেই নিষ্প্রাণ ভূমি নানা রকম বৃক্ষ-লতায় ভরে ওঠে, যা দেখে দর্শকের চোখ জুড়িয়ে যায়। যে আল্লাহ এটা করতে সক্ষম তিনি কি আমাদের পুনর্বার জীবন দান করতে পারবেন না?

আকাশ থেকে আল্লাহ যে বৃষ্টি বর্ষণ করেন তা মানুষের পক্ষে সংরক্ষণ করে রাখা সম্ভব নয়।

আল্লাহ তায়ালা কুদরতিভাবে পাহাড়-পর্বতে তা বরফ আকারে জমা করে রাখেন। তারপর সে বরফ গলে-গলে নদ-নদীর সৃষ্টি হয়। তা থেকে শিরা-উপশিরারূপে সে পানি ভূগর্ভে ছড়িয়ে পড়ে এবং মাটির স্তরে স্তরে তা জমা হয়ে থাকে। কোথাও কুয়া ও প্রস্রবণের সৃষ্টি হয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি আকাশ থেকে বর্ষণ করি পবিত্র পানি। তা দ্বারা মৃত ভূমিকে সঞ্জীবিত করা এবং আমার সৃষ্ট বহু জীবজন্তু ও মানুষকে তা পান করানোর জন্য।’ (সুরা ফুরকান : ৪৮-৪৯)

বৃষ্টি ও নদ-নদীর পানিতে সিক্ত জমিনে সৃষ্টি হয় হাজারো রকমের ফলমূল। প্রতিটির রস-স্বাদ ভিন্ন। একই ঝরনার পানিতে সিঞ্চিত দুটো বৃক্ষের ফলের স্বাদ দুই রকম।

বর্ণিত হয়েছে, ‘আর পৃথিবীতে আছে বিভিন্ন ভূখ-, যা পাশাপাশি অবস্থিত। আর আছে আঙুরের বাগান ও খেজুর গাছ, যার মধ্যে কতক একাধিক কা-বিশিষ্ট এবং কতক এক কা-বিশিষ্ট। এসব একই পানি দ্বারা সিঞ্চিত হয়। আমি স্বাদে তার কতককে কতকের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে থাকি। নিশ্চয়ই এসব বিষয়ের মধ্যে সেই সব লোকের জন্য নিদর্শন আছে, যারা বুদ্ধিকে কাজে লাগায়’ (সুরা রাদ : ৪)।

অর্থাৎ কোনো গাছে বেশি ফল ধরে, কোনো গাছে কম এবং কোনো গাছের ফল বেশি স্বাদযুক্ত এবং কোনো গাছের ফল ততটা স্বাদের নয়। কোনো ফলের রস মিষ্টি আর কোনো ফলের রস টক।

পানি ছাড়া মানুষ, জীব, গাছপালা ইত্যাদি যেমন বেঁচে থাকতে পারে না, তেমনি পানি-বৃষ্টির মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টিজীবকে ভয়ংকর আজাবে নিপতিত করতে পারেন, ধ্বংস করে দিতে পারেন সুরম্য প্রাসাদ, সজ্জিত জনপদ ও নগর-গ্রাম। ফলে মানুষ হিসেবে আমাদের কর্তব্য হবে আল্লাহ তায়ালার নাফরমানি পরিত্যাগ করা।

চাঁপাইবার্তা/ডিপি।।